দ্রাব্যতা কাকে বলে? দ্রাব্যতা গুণফল ও সূত্রসহ সহজ ব্যাখ্যা
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। Mujahid Blogs -এ আপনাদের স্বাগতম।
HSC রসায়নে দ্রাব্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই পোস্টে দ্রাব্যতা কী, এর প্রকারভেদ এবং তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
দ্রাব্যতা কি?
দ্রাব্যতা (Solubility) বলতে বোঝায়, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবকে (solvent) একটি পদার্থ (solute) কতটা পরিমাণে দ্রবীভূত হতে পারে। সহজভাবে বললে, কোন পদার্থ কতটুকু পানিতে মিশতে পারে, সেটাই হলো তার দ্রাব্যতা। উদাহরণস্বরূপ, ২৫°C তাপমাত্রায় ১০০ গ্রাম পানিতে ৩৬ গ্রাম লবণ (NaCl) সম্পূর্ণভাবে মিশে যেতে পারে — এটাই লবণের দ্রাব্যতা।
তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাব
- তাপমাত্রা:
সাধারণভাবে কঠিন ও তরল পদার্থের দ্রাব্যতা তাপমাত্রা বাড়লে বেড়ে যায়। তবে গ্যাসীয় পদার্থের ক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটে — তাপমাত্রা বাড়লে গ্যাসের দ্রাব্যতা কমে।
- চাপ:
চাপ মূলত গ্যাসের দ্রাব্যতার ওপর প্রভাব ফেলে। চাপ বাড়লে গ্যাস দ্রবণে বেশি মিশতে পারে। এই কারণে কোল্ড ড্রিংকে কার্বন ডাই-অক্সাইড চাপ দিয়ে মেশানো হয়।
দ্রাব্যতার ধরণ
দ্রাব্যতা তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
- সম্পূর্ণ দ্রবণীয়: যেমন NaCl পানিতে
- আংশিক দ্রবণীয়: যেমন Ca(OH)₂
- অদ্রবণীয়: যেমন BaSO₄
দ্রাব্যতার গাণিতিক সূত্র:
1. সাধারণ দ্রাব্যতা সূত্র:
- দ্রাব্যতা = (দ্রবের পরিমাণ ÷ দ্রাবকের পরিমাণ) × ১০০
2. দ্রাব্যতা থেকে দ্রব নির্ণয়:
- দ্রব (গ্রাম) = (দ্রাব্যতা × দ্রাবকের পরিমাণ) ÷ ১০০
3. দ্রাব্যতার শতকরা হার:
- দ্রাব্যতার শতকরা হার = (দ্রবের ভর ÷ সম্পূর্ণ দ্রবণের ভর) × ১০০
উদাহরণস্বরূপ একটি গাণিতিক সমস্যা:
প্রশ্ন: ২৫° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১০০ গ্রাম পানিতে ৩৬ গ্রাম লবণ দ্রবীভূত হতে পারে। তবে ৫০ গ্রাম পানিতে সর্বোচ্চ কত গ্রাম লবণ দ্রবীভূত হবে?
সমাধান:
আমরা জানি,
দ্রাব্যতা = ৩৬ গ্রাম / ১০০ গ্রাম দ্রাবক
তাহলে,
৫০ গ্রাম দ্রাবকে দ্রব = (৩৬ × ৫০) ÷ ১০০ = ১৮ গ্রাম
উত্তর: ৫০ গ্রাম পানিতে সর্বোচ্চ ১৮ গ্রাম লবণ দ্রবীভূত হতে পারে।
পরীক্ষায় দ্রাব্যতা অধ্যায় থেকে কী ধরনের প্রশ্ন আসে?
- সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা
- গ্রাফ চিত্র (Solubility curve) বিশ্লেষণ
- MCQ ও সৃজনশীল প্রশ্ন
- গণনা সম্পর্কিত সমস্যা (solubility calculation)
- দ্রাব্যতা গুণফল কী? সূত্রসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা
অধ্যায়টি সহজে আয়ত্ত করার উপায়:
- নিয়মিত সংজ্ঞা ও সূত্র মুখস্থ করুন
- প্রতিদিন একটি করে গাণিতিক সমস্যা সমাধান করুন
- বোর্ড বইয়ের উদাহরণ বারবার পড়ুন
- দ্রাব্যতা সম্পর্কিত চিত্র নিজে হাতে আঁকার অভ্যাস করুন
HSC রসায়নের দ্রাব্যতা অধ্যায়টি শুধুমাত্র বোর্ড পরীক্ষার জন্য নয়, বরং বাস্তব জীবনের বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে ভালো ফলাফল করতে চাইলে অবশ্যই প্রতিদিন প্র্যাকটিস এবং অধ্যবসায় করতে হবে। বুঝে পড়লে এই অধ্যায়টি সহজ ও নম্বর তোলার মতো।
সিলেট আইটি বাড়ির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url