জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ভেক্টর রাশির যোগের সূত্র (Laws of addition of vectors in geometrical method)

আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। Mujahid Blogs -এ আপনাদের স্বাগতম।  
আজ আমি আপনাদের সাথে চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আর সেই চমৎকার বিষয়টি হলো-  জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ভেক্টর রাশির যোগ, Laws of Addition of Vectors in Geometrical Method.

ভেক্টর রাশির যোগের সূত্র (Laws of addition of vectors ):

ভেক্টর রাশির যোগ নিম্নলিখিত পাঁচটি সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়।  ; যথা-
  1.  সাধারণ সূত্র (General law) 
  2.  ত্রিভুজ সূত্র (Law of triangle)
  3.  সামান্তরিক সূত্র (Law of parallelogram) এবং
  4.  উপাংশ সূত্র (Law of components) ।
এই অনুচ্ছেদে আমরা প্রথম চারটি সূত্র আলোচনা করবো।

১. সাধারণ সূত্র (General law)

সমজাতীয় দুটি ভেক্টরের প্রথমটির শীর্ষ বা শেষ বিন্দু এবং দ্বিতীয়টির আদি বিন্দু একই বিন্দুতে স্থাপন করে প্রথম ভেক্টরের আদি বিন্দু ও দ্বিতীয় ভেক্টরের শীর্ষবিন্দুর মধ্যে সংযোগকারী সরলরেখার দিকে লব্ধি ভেক্টরের দিক নির্দেশ করে এবং ওই সরলরেখার দৈর্ঘ্য ভেক্টর দুটির লব্ধির মান নির্দেশ করবে।

ধরা যাক একই বিন্দুতে একই সময়ে ক্রিয়াশীল দুটি ভেক্টর রাশি ও ২-এর লব্ধিই নির্ণয় করতে হবে।

P' নির্দেশী সরলরেখা AB-এর শীর্ষবিন্দু B-তে নির্দেশী সরলরেখার আদি বিন্দু থাকে। এরূপে BC রেখা দ্বারা নির্দেশ করে P-এর আদিবিন্দু A এবং Q-এর শীর্ষবিন্দু C যুক্ত করি এবং রেখাটিকে A হতে C অভিমুখে তীর চিহ্নিত করি [চিত্র ২১৭]। তা হলে তীর চিহ্নিত AC রেখাই লব্ধি

নির্দেশ করবে। এখানে রাশি দুটির যোগফল নিম্ন উপায়ে লেখা হয়-
R=P+Q
অনুরূপে দুই বা ততোধিক ভেক্টর রাশি যোগ করা যায়।

তিনটি ভেক্টর রাশি P, Q ও R যথাক্রমে তীর চিহ্নিত OA, AB ও BC সরলরেখায় নির্দেশ করে OC সরলরেখা দ্বারা এদের লম্বি R সূচিত হয়েছে।

এখানে লব্ধি, R=P+Q+S
আবার P, Q, R একই ত্রিভুজের তিনটি বাহু বরাবর ক্রিয়াশীল হলে P+Q+R=0 হয়। 

২. ত্রিভুজ সূত্র (Law of triangle)

কোনো ত্রিভুজের দুটি সন্নিহিত বাহু বরাবর একইক্রমে দুটি ভেক্টর ক্রিয়াশীল হলে ত্রিভুজের তৃতীয় বাহুটি বিপরীতক্রমে ভেক্টর দুটির লব্ধি নির্দেশ করবে। 

মনে করি, ABC ত্রিভুজের দুটি সন্নিহিত বাহু AB ও BC বরাবর ও একই দিকে ক্রিয়াশীল, তাহলে ত্রিভুজটির তৃতীয় বাহু AC বরাবর ও এর লব্ধি নির্দেশিত হবে। 
অর্থাৎ, AB+BC=AC বা, P+Q=R
পুন,     AB+BC=AC=-CA      [AC=-CA]
বা,        AB+BC+CA=0

৩. বহুভুজ সূত্র (Law of polygon)

দুই বা ততোধিক ভেক্টর রাশির ক্ষেত্রে ভেক্টর রাশিগুলোকে একই ক্রমে সাজিয়ে প্রথম ভেক্টরের পাদবিন্দু এবং দ্বিতীয় ভেক্টরের শীর্ষবিন্দু যোগ করলে বিপরীতক্রমে ভেক্টরদ্বয় লব্ধি পাওয়া যায়। এভাবে পরবর্তী প্রত্যেকটি ভেক্টরের পাদবিন্দু ও শীর্ষবিন্দু যোগ করতে করতে সর্বশেষ যে ভেক্টরটি পাওয়া যায়সেই বাহুটিই ভেক্টর রাশিগুলোর লখির মান ও দিক নির্দেশ করে।

ব্যাখ্যা: মনে করি,    A, B, C, D, E পাঁচটি ভেক্টর রাশি ; এদের লব্ধি নির্ণয় করতে হবে। এখন প্রথম ভেক্টর রাশির শীর্ষবিন্দুর ওপর দ্বিতীয় ভেক্টর রাশির পাদবিন্দু, দ্বিতীয় ভেক্টর রাশির শীর্ষবিন্দুর ওপর তৃতীয় ভেক্টর রাশির পাদবিন্দু স্বাপন করি এবং এমনিভাবে ভেক্টর রাশিগুলোকে পর পর স্থাপন করি। তাহলে বহুভুজ সূত্রানুসারে প্রথম ভেক্টর রাশির আদি বিন্দু এবং শেষ ভেক্টর রাশির শীর্ষবিন্দুর সংযোজক ভেক্টর রাশি R-ই উল্লিখিত ভেক্টর রাশিগুলোর লব্ধির মান ও দিক নির্দেশ করবে। 

লব্দি,   R=A+B+C+D+E

৪. সামান্তরিক সূত্র Law of parallelogram

কোনো সামান্তরিকের একই বিন্দু হতে অঙ্কিত দুটি সন্নিহিত বাহু যদি কোনো কণার ওপর একই সময়ে ক্রিয়ারত দুটি ভেক্টর রাশির মান ও দিক নির্দেশ করে, তা হলে ওই বিন্দু হতে অঙ্কিত সামান্তরিকের কর্ণই এদের লখির মান ও দিক নির্দেশ করে।

মনে করি ০ বিন্দুতে একটি কণার উপর OA = P ও OC = Q দুটি ভেক্টর রাশি একই সময়ে Z কোণে ক্রিয়া করছে । OA ও OC-কে সন্নিহিত বাহু ধরে OABC সামান্তরিকটি অঙ্কন করি এবং OB যুক্ত করি। এই সূত্রানুসারে উভয় ভেক্টরের ক্রিয়াবিন্দু থেকে অঙ্কিত কর্ণ OB-ই ভেক্টর P ও Q-এর লব্ধি নির্দেশ করে। → অর্থাৎ, OA + OC = OB  বা, P+Q = R

জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ভেক্টর রাশির যোগের সূত্র:


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সিলেট আইটি বাড়ির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url